বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১০ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
রাজু আহমেদ রাজবাড়ী :
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার এক যৌনকর্মীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার কথিত স্বামী রাশেদ খানের বিরুদ্ধে। রোববার দুপুর ২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যৌনকর্মী মুন্নির মৃত্যু হয়। জানা যায়, বিষাক্ত ইনজেশন দিয়ে ফারজানা আক্তার মুন্নি (২৬) নামের যৌনকর্মীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ফারজানা আক্তার মুন্নি দীর্ঘদিন ধরে দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে বসবাস করে। তার কাছে আসা-যাওয়া করত রাশেদ খান। এক পর্যায়ে রাশেদ খান মুন্নির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় রাশেদ খান মুন্নির উপার্জিত টাকা হাতিয়ে নেয়। যৌনকর্মী মুন্নিও তার সর্বস্ব দিয়ে রাশেদ খানকে বিয়ে করে অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি নিতে চায়। কিছুদিন আগে মুন্নি রাশেদ খানকে নগদ ৩ লাখ টাকা দেয়। এরপর রাশেদ খান তাকে কাবিন রেজিস্ট্রি করে বিয়েও করে। কিন্তু রাশেদ খান চায় মুন্নি যৌনপেশা চালিয়ে অর্থ উপার্জন করুক। মুন্নি রাশেদ খানের কাছে স্বাভাবিক জীবন চায় আর রাশেদ চায় মুন্নি ওই পেশা চালিয়ে টাকা আয় করে তার হাতে তুলে দিক। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়।
মুন্নিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া একাধিক ব্যাক্তি অসুস্থ্য মুন্নির বরাত দিয়ে জানান, রোববার ভোরে রাশেদ মুন্নিকে বলে তোমার শরীর দুর্বল একটি ভিটামিন স্যালাইন দিলে ঠিক হয়ে যাবে। তার কথা বিশ্বাস করে মুন্নি রাজি হয়। এরপর রাশেদ নিজেই মুন্নির গায়ে স্যালাইন পুশ করে। কিছুক্ষনের মধ্যে মুন্নির শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। এসময় রাশেদ খান মুন্নির ব্যবহার করা মোবাইল ফোনসহ ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুর ২টার দিকে মুন্নির মৃত্যু হয়। মুন্নি ময়মনসিংহ জেলার গৌরিপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে। এ ঘটনার পর ঘাতক কথিত স্বামী রাশেদ খান মুন্নির ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিস পত্র নিয়ে পালিয়েছে। সে পাবনা সদর থানার শনিরদিয়া ভবানীপুর গ্রামের ছলিম খানের ছেলে। গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নিতাই চন্দ্র জানান, প্রথমে ওই রোগীকে মারামারির রোগী হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সময় বাড়ার সাথে সাথে তার শরীরে বিষক্রিয়ার উপস্বর্গ ধরা পরে। একপর্যায়ে তারা নিশ্চিত হন ভর্তিকৃত রোগীর শরীরে বিষাক্ত ইনজেশন পুশ করা হয়েছে। ক্রমেই তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, দৌলতদিয়া যৌনপল্লির এক বাসিন্দার মৃত্যুর খবর মৌখিক ভাবে শুনেছেন। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পাঠানো হয়েছে।